November 21, 2024, 5:05 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
চাল আমদানিতে সরকারের শুল্ক প্রত্যাহারের পর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। প্রথম চালানে গত রোবরার এসেছে ১০৫ টন (এক লাখ ৫ হাজার কেজি) আজ সোমবার এসেছে ১০০ টন চাল।
যশোরের মাহাবুবুল আলম ফুড প্রোডাক্ট নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সুধর্মআয়াত নির্যাত প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান থেকে এই চাল দেশে এনেছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, দুই বছর পর এ বন্দর দিয়ে ভারতে চাল দেশে এলো। ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি বন্ধ ছিল। এরপর ২০২৩ সালের ২০ জুলাই দেশের বাইরে সিদ্ধ ও আতপ চাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত।
গত ১১ নভেম্বর খাদ্য মন্ত্রণালয় এক আদেশে ২৪টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে চাল আমদানির অনুমতি দেন। এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ও ৫৫ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানির অনুমতি দেন।
বাজারে চালের সরবরাহ বৃদ্ধি, দেশের আপামর জনগণের ভবিষ্যত খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং চালের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ও সহনীয় পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে চাল আমদানির ওপর বিদ্যমান আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ১৫ শতাংশ, বিদ্যমান রেগুলেটরি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ৫ শতাংশ এবং বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে অর্থাৎ মোট করভার ৬২.৫ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করে গত ২০ অক্টোবর প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল এনবিআর কর্তৃপক্ষ।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের শর্তে বলা হয় বরাদ্দপ্রাপ্ত আমদানিকারকদের আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে সমুদয় চাল বাংলাদেশে বাজারজাত করতে হবে। আমদানি করা চালের পরিমাণ, গুদামজাত ও বাজারজাতকরণের তথ্য সংশ্লিষ্ট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে অবহিত করতে হবে, বরাদ্দের অতিরিক্ত আইপি ইস্যু করা যাবে না, আমদানিকৃত চাল অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের নামে পুনরায় প্যাকেটজাত করা যাবে না। আমদানি করা চাল বস্তায় বিক্রি করতে হবে।
চলতি বছরে ২১ মার্চ ও ১৬ এপ্রিল দুই ধাপে দেশের ৮০টি প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ ৭ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছিল খাদ্য মন্ত্রণালয়। চাল রপ্তানিতে ভারত সরকারের শুল্ককর আরোপ ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে ডলার সংকটের কারণে অনুমতি থাকলেও এতদিন চাল আমদানি করতে পারেনি ব্যবসায়ীরা।
বেনাপোল চেকপোস্ট উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী হেমন্ত কুমার সরকার জানান, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান, মাহাবুবুল আলম ফুড প্রোডাক্ট প্রথম চালানে ১০৫ টন ও দ্বিতীয় চালানে ১০০ টন চালের আইপি সার্টিফিকেট নিয়েছেন।
দুদিনে আসা এ চাল খালাসের দায়িত্বে রয়েছে হোসেন অ্যান্ড সন্স নামের একটি সিএন্ডএফ এজেন্ট। সিএন্ডএফ এজেন্টের প্রতিনিধি জিয়াউর রহমান জানান, সকল প্রক্রিয়া শেষে তারা বন্দর থেকে চাল বুঝে নিয়েছেন।
জিয়াউর জানান, আমদানি প্রতিকেজি চালের দাম পড়েছে প্রায় ৫২ টাকা। এরপর পরিবহন, বন্দরের ভাড়া, ব্যাংক খরচসহ অন্যান্য খরচ রয়েছে। সেই হিসেবে প্রতিকেজি ৫৫ টাকা পড়ে যাবে। খুচরা বাজারে এই চাল সবোর্চ্চ ৫৭ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া উচিত।
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, কোন ঝামেলা ছাড়াই বেনাপোল বন্দরে চালের চালান প্রবেশ করেছে। কাস্টমস থেকে শুল্কায়নের পর দ্রুত চাল ছাড় দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, যাশোরের বেশ কয়েকজন আমদানিকারকের সাথে এ প্রতিবেদক কথা বলেন। তারা জানান, সমুদয় চাল আমদানির জন্য সময় খুবই অল্প। এই অল্প সময়ের মধ্যে এত পরিমাণ চাল আমদানি করা দু: সাধ্য।
মোট ২৪ জন আমদানিকারকের মধ্যে যশোর এলাকার ১২ জন আমদানিকারক সর্বমোট ৭৩ হাজার টন সিদ্ধ ও ১৯ হাজার টন আতপ চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন আমদানিকারক জানান, দ্রæত চাল সংগ্রহ করতে গেলে নি¤œ মানের চাল প্রবেশ করে বসতে পারে। এটা অনেক অতীতের মতো অপ্রীতিকর হবে। তাই সময়ের দিকে সরকারের নজর রাথা দরকার বলে তিনি মনে করেন।
Leave a Reply